একসময় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ না পেয়ে হতাশায় ডুবে যাওয়া একজন তরুণ, আজ গুগলের একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার! এটা কেবল একটি সাফল্যের গল্প নয়, এটা এক সাহস, সংগ্রাম আর অদম্য ইচ্ছাশক্তির গল্প—Nafiul Adnan Chowdhury-এর জীবনের বাস্তব কাহিনি।
পাবলিকে চান্স না পেয়ে এক বছর গ্যাপ, কোনো ভার্সিটিতে চান্স না পেয়ে ডিপ্রেশনে ডুবে যাওয়া, তারপর সিএসই-তে ভর্তি কেবল এই চিন্তা নিয়ে—“কমপক্ষে পিসির সামনে থাকলে আব্বু-আম্মু ভাববে পড়ছি।” ভর্তির সময় কেউ কেউ বলেছিলেন, “ফিজিক্স-ম্যাথে এ+ নাই, তুমি সিএসই পারবা?” — সেই শুনেও থেমে যাননি নাফিউল।
গুগলে জব কী জিনিস তা জানতেনও না তিনি। প্রথম সেমিস্টারে এক স্যার একজন গেস্ট নিয়ে আসেন যিনি সাস্ট থেকে গুগলে জব পেয়েছিলেন—সেখানেই প্রথম জানলেন গুগলে চাকরি পাওয়া কত বড় বিষয়।
এরপর এক সময় সাস্টে CSE Carnival এ প্রথমবার অংশ নেওয়া, সেখান থেকেই শুরু হয় কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং আর প্রবলেম সল্ভিংয়ের পথচলা। কখনো কারো কাছ থেকে সাহায্য নিতে দ্বিধা করেননি, এমনকি ইন্টারভিউর আগেও এক জুনিয়রের কাছ থেকে টপিক বুঝে নিয়েছেন।
ভালো প্রবলেম সল্ভিং স্কিল, অ্যালগরিদম ও ডেটা স্ট্রাকচারের জ্ঞান তাঁকে গ্র্যাজুয়েশন শেষের আগেই প্রথম জব পাইয়ে দেয়। তবে গুগলের মতো বিগ টেকে আবেদন করার সাহস পাচ্ছিলেন না, যদিও ইচ্ছা ছিল। এক ছোটবোনের কাছ থেকে Cracking the Coding Interview বই নিয়ে শুরু করেন প্রস্তুতি। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় গুগল-স্পেসিফিক প্রিপারেশন।
পরিচিত বড় ভাইবোন, বন্ধু, টিচার—সবাই পাশে ছিলেন। একজন বড় ভাই সিভি রেফার করলেন। নভেম্বর ১৮-এ রিক্রুটারের মেইল। প্রস্তুতির জন্য নিজের প্রথম চাকরি ছেড়ে দিলেন। ডিসেম্বর ৬ তারিখে প্রথম রাউন্ড, জানুয়ারির ২০ ও ২১ তারিখে ফাইনাল পাঁচটি ইন্টারভিউ।
জানুয়ারির ৩১ তারিখ—গুগলের কল:
“You totally smashed the interviews! We are offering you the job now, are you willing to join Google, Dublin?”
বউ লাফিয়ে খবর জানালেন, আব্বু-আম্মু কান্না শুরু করলেন। প্রিয় মানুষদের মুখে সেই আনন্দের হাসি ও চোখের পানি—এই সাফল্য যেন কেবল তাঁর একার নয়, তাঁদেরও।
নাফিউল আদনান চৌধুরী
Sylhet Metropolitan University
Software Engineer (Site Reliability)
Google – Dublin, Ireland
Proud of him!